আগামী নির্বাচন ফেয়ার ও সুষ্ঠু হবে– আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হয়েছে, তিনি শুধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নন, বিএনপিরও উপদেষ্টা।
তিনি সর্বদা বিএনপিকে নিয়ে যে চিন্তায় থাকেন তাতে মনে হয় তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তিনি ফেয়ার নির্বাচন বলতে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী’র কথা বুঝিয়েছেন কি-না তা বোধগম্য নয়।
আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ফেয়ার নির্বাচনের একটি আওয়ামী ভার্সন রয়েছে যা ১৪ বছরে দেশের মানুষ দিব্যচোখে অবলোকন করেছে।
তার ফেয়ার নির্বাচনের সংজ্ঞা অনুযায়ী সুষ্ঠু ভোট হলো– ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে জনগণকে কাবু করতে সকল শক্তি নিয়োগের মাধ্যমে ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের নিশিরাতের নির্বাচন।’
রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচন ইভিএমে হওয়া এবং নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকার যে কথা আপনারা বলেছেন তাতেই আপনার আগাম বার্তা জনগণ স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে– আগামী নির্বাচন হবে মহাজালিয়াতি ও দস্যুবৃত্তির।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পাতা ঝরতে শুরু করেছে, এরা এখন ঝরাপাতা। তাই লুটপাট আর রক্তপাতের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে কোনো রকমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। দেশব্যাপী সয়াবিন তেল নিয়ে যে তেলেসমাতি চলছে তাতেই বুঝা যায়– সরকারের লুণ্ঠনের কর্মসূচি ছাড়া তাদের অন্য কোনো কর্মসূচি নেই।
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার মুনাফাখোরদের সুযোগ করে দিচ্ছে। একেবারেই ভুল তথ্য। সরকার এবং মুনাফাখোর একাকার। আলাদা ভাবার কোনো অবকাশ নেই। তেল আমদানিকারক বড় ৫টি কোম্পানি সবাই সরকারের সাথে যুক্ত।
সরকারই মুনাফাখোর, মুনাফাখোরই সরকার। এ কারণেই সরকারের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য মাফিয়ার মতো। মাফিয়ারা নিজের শক্তিতে বলিয়ান। এরা কাউকে সুবিধা দেয় না, নিজেরা সুবিধাভোগীর একটি বিশেষ চরিত্র হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামগ্রিক চরিত্র এটি।
রিজভী বলেন, সর্বত্রই ক্ষমতাসীনদের মিথ্যার বেসাতি। মিথ্যার বাড়াবাড়ি কখনোই কোনো সুসংহত বিজয় আনতে পারে না। এদের জারক-রস ফুরিয়ে এসেছে। কোনো চক্রান্ত দিয়ে সংগ্রামী জনগণকে নতিস্বীকার করানো যাবে না। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে এবং ব্যালট পেপারই হবে ভোটদানের পদ্ধতি।
তিনি বলেন, এই সরকারের পতন অত্যাসন্ন। এই সরকারের পতনের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের জন্য একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে তোলা যাবে।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।